ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এস এম খায়রুল হাসান (৫৭)। ২য় শ্রেণির এই চাকরির ১০তম গ্রেডের সর্বোচ্চ বেতন ৩৮ হাজার, ৬৪০ টাকা। এই বেতনে চাকরি করেই কোটিপতি তিনি। বাস করেন ফ্যামিলি নিয়ে সিরাজগঞ্জ শহরের সয়াধান গড়া জগাই মোড় এলাকায় তিন তলা বিশিষ্ট আলিশান নিজের ফ্ল্যাট বাড়িতে ।এ ভূমি কর্মকর্তা বর্তমানে সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী ইউনিয়নে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এস এম খায়রুল হাসান ( ১৯৮৯ ইং সালে) ইউনিয়ন ভূমি উপ- সহকারী কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি তে যোগদান করেন। ঠিক এরপরই কপাল খুলে যায় এ কর্মকর্তার। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে জমি খারিজ, খাজনা, নামজারি ও পর্চার কাজে ঘুস নিয়ে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। ‘জমির নামজারি সহ ভূমি সংক্রান্ত কোনো কাজ করতে গেলেই এস এম খায়রুল হাসান কে ঘুস দিতে হয়। সরেজমিনে ও তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, এস এম খায়রুল হাসান (১১-০৪-২১ ইং) সালে শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী ইউনিয়নে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করার পরে সে এবং তার অফিস সহায়ক মোঃ রেজাউল করিম ঘুষের রাজত্ব কায়েম করে ।খুকনী ইউনিয়নের খুকনী পশ্চিমপাড়া গ্রামের ভুক্তভোগী আবদুল মান্নান বলেন, ‘জমির খারিজের সরকারি ফি ১১,৭০ টাকা কিন্তু নায়েব এস এম খায়রুল হাসান এবং তার অফিস সহায়ক রেজাউল করিম আমার কাছ থেকে ঘুস নিয়েছিল ২০,০০০ হাজার টাকা। খুকনী ইউনিয়নের খুকনী উত্তর পারা মোতালেব হোসেন বলেন আমার খারিজের বিষয়ে নায়েব এস এম খায়রুল হাসান কাছে গেলে তিনি বলেন আপনার জমির কাগজ পাতি তে অনেক ঝামেলা আছে, এক সপ্তাহে পরে আসেন দেখি কি করা যায়, এক সপ্তাহ পারে আসলে তিনি বলেন আপনি অফিস সহায়ক মোঃ রেজাউল করিম এর সাথে কথা বলেন কিন্তু রেজাউল করিম এর কাছে গেলে তিনি বলেন আপনার জমিতে অনেক সমস্যা এইগুলি ঠিক করতে ২৫,০০০ হাজার টাকা লাগবে পরে আমি ২৫,০০০ হাজার টাকা দিয়ে এই গুলি নিরুপায় হয়ে ঠিক করে নেই ।খুকনী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সংবাদকর্মীরা সরেজমিনে তথ্যের জন্য গেলে অফিস টাইমে অফিস বন্ধ পাওয়া যায় , পরে অফিসের সামনে দুই দালালকে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় দেখা যায় সংবাদকর্মীরা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে যে আমরা অফিসে কাজ নিয়ে এসেছি কিন্তু সাড়ে তিনটার সময় অফিস বন্ধ পাচ্ছি। দালান আবু তালেব কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমি নায়েব সাহেবকে দুটি খারিজের কাজ দিয়েছিলাম নায়েব সাহেব আমার কাছে যে পরিমাণ খরচের টাকা চেয়েছিল, আমি সেই পরিমাণ খরচের টাকা দিয়ে ছিলাম। কিন্তু উনি আমাকে দুই মাস যাবত ঘুরাচ্ছেন।দালাল আবু তালেবকে জমির সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে যে জমি কি আপনার? তখন তিনি বলেন না, জমি আমার না। কিন্তু যারা জমির কাগজ বোঝে না। সেই সমস্ত লোকের কাজ আমি কমিশনে নিয়ে থাকি। এবং সেই কাজগুলো আমি নায়েব সাহেবকে দিয়ে করিয়ে নিই। এস এম খায়রুল হাসান কে তার ভূমি অফিস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এই বিষয়ে কোনো তথ্য না দিয়ে এড়িয়ে যান। খুকনী ইউনিয়নে জনসাধারণকে ভূমি অফিস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, এই ভূমি অফিসে ঘুষ ছাড়া কোন কাজই হয় না এবং সপ্তাহের বেশি ভাগ সময় ই অফিস বন্ধ থাকে। এই ভূমি অফিস সরকারি সময় অনুযায়ী চলে না, তাদের নিজেদের সময় অনুযায়ী চলে তাদের যখন ইচ্ছা তখন অফিস বন্ধ রাখে এবং যখন ইচ্ছা তখন অফিস খোলে। এস এম খায়রুল হাসান দীর্ঘ ৪ বছর ধরে ঘুষের রাজত্ব কায়েম করে যাচ্ছে খুকনী ভূমি অফিসে দেখার যেন কেউ নেই।উক্ত বিষয়ে ঊর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছে ভুক্তভোগী জনসাধারণ।