দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি
সমাজসেবা কতৃক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অসহায়, দুস্থ রোগীদের জন্য একটি ফান্ড রয়েছে। সেই ফান্ড থেকে রোগীরা ছোট পরিসরে সেবা নিয়ে থাকেন। সেই সেবায় রয়েছে আবার স্বজনপ্রীতি। এমনি এক স্বজনপ্রীতির খবর পাওয়া গেছে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। এ হাসপাতালে আগত ৮০ শতাংশ দরিদ্র সেবা প্রার্থীরা নানাভাবে প্রতারণার শিকার হয়ে থাকেন দালালদের মাধ্যমে।
বেশিরভাগ দুস্থ রোগী বা রোগীর স্বজনরা জানেন না সমাজসেবার সেবাসমূহ। তাই তারা দালালদের মাধ্যমে সেবা গ্রহণ করে থাকেন।
জানা গেছে, এ হাসপাতালে সমাজসেবার মাধ্যমে অসহায়, দুস্থ রোগীদের বিনামূল্যে ঔষধ প্রদান করা হয়। সেই ঔষধ নিতে নির্দিষ্ট ফার্মেসি চিহ্নিত করে দিয়েছে সমাজসেবা কতৃপক্ষ। এতেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন সাধারণ রোগী ও রোগীর স্বজনরাসহ স্থানীয় ফার্মেসী মালিকগণ।
নাম বলতে অনিচ্ছুক এক রোগীর স্বজন বলেন, আমরা গরিব মানুষ। ভাল সেবা নিতে এসেছি হাসপাতালে। সেই অনুযায়ী সমাজসেবায় আবেদন করেছি। এরপর আমার পরিবারের অসুস্থ ব্যক্তির ঔষধ কিনতে সমাজসেবার লোকজন একটি দোকান দেখিয়ে দেয়। আমি বললাম, আমার ইচ্ছে আমি যেখানে খুশি নিব। তারা বলেন, ওই দোকানে দাম কম। এতেই আমার সন্দেহ হয়। মনে হচ্ছে, কমিশন পায় সেই দোকান থেকে।
ফার্মেসীর মালিক বলেন, মেডিকেলের সমাজসেবা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দলীয় ফার্মেসী থেকে ঔষধ সরবরাহ করে। নির্দিষ্ট দুই থেকে তিনটি ফার্মেসীতে রোগী পাঠায়।
এ বিষয়ে সমাজসেবা অফিসে জানতে গেলে, অফিস সহায়ক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, সমাজসেবা থেকে অল্প পরিসরে সেবা দেওয়া হয়। এই সেবা খাতকে নষ্ট করার জন্য অনেক ফার্মেসির দালালরা এসে মেডিকেল কলেজে দরজায় দাঁড়িয়ে থাকে। রোগী আসার সাথে সাথে দালালরা নানা ধরনের কথা বলে তাদের ফার্মেসিতে নিয়ে যায়, গিয়ে বেশি দামে ওষুধ বিক্রি করে। আমরা সমাজসেবা থেকে অসহায় রোগীদের বলি সোহাগ ফার্মেসী ও গ্রামীণ ফার্মেসী থেকে নেওয়ার জন্য। এই দুইটা ফার্মেসিতে পাইকারি দামে ওষুধ বিক্রি। আমাদের রোগীরা যেন কোন দালালদের হাতে না পড়ে, তার জন্য আমরা এই দুইটা ফার্মেসীতে পাঠিয়ে দেই।
এদিকে খবর নিয়ে জানা যায় দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকিট কাউন্টারে কর্মরত(সোহাগ ফার্মেসী) সোহাগ ফ্যাসিস্ট সরকারের সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমের মাধ্যমে চাকরি হওয়া এবং গ্রামীণ ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী বরসাত সাবেক হুইপের চাচাতো ভাই হবার পরিচয় প্রদানকারী সুবাদে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে এই দুটি ফার্মেসি থেকে দীর্ঘদিন যাবত ওষুধ নিতে বাধ্য করা হয় বলে রোগীর স্বজনরা জানান ।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশাবাদী রোগীর স্বজন ও স্থানীয়দের ।