প্রচন্ড গরমে ধানকাটা শ্রমিকরা বাড়তি মজুরি দাবি করায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকদের মুখে। ধান কাটার মৌসুম কৃষকদের জন্য আনন্দের হলেও সেখানে উৎসবের বদলে দেখা দিয়েছে হতাশা। শ্রমিকের সংকট না থাকলেও প্রচলিত মজুরির চাইতে অধিক মূল্য দাবি করায় পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষক পরিবারগুলো।
চট্রগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় প্রতিবছর বোরো ধান কাটার মৌসুমে রাঙ্গুনিয়ার ঐতিহ্যবাহী বাজারে বসে শ্রমিকের বেচা-কেনার হাট। মূলত এই হাটে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে ধান কাটার শ্রমিকেরা ও জমির মালিকরা এসে জড়ো হন। এরপর সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী চুক্তিতে শ্রমিকদের নিয়ে যান জমির মালিকরা।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রোয়াজারহাট ইছামতি নদীর নদীর পাড়ে ফুল গাছের ছায়ায় বসেছে এ মৌসুমে ধান কাটা শ্রমিকের হাট।
দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল এমনকি অন্য উপজেলা থেকে ধান কাটার সরঞ্জাম নিয়ে দলে দলে শ্রমিকেরা এসে জড়ো হয়েছেন হাটে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা, অন্যান্য অঞ্চলসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার ধানচাষি জড়ো হয়েছেন শ্রমিক কিনতে। চলছে দুই পক্ষের দর-কষাকষি। প্রচন্ড গরমের কারণে চড়া দর দাবি করছেন শ্রমিকরা। দর-কষাকষি চুক্তির ভিত্তিতে নিয়ে রওনা হচ্ছেন ঘরে।
রোয়াজারহাট স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঐতিহ্যবাহী রোয়াজারহাট ইছামতি নদীর তীরে শ্রমিক কেনাবেচার হাট বসে বহু বছর ধরে। স্থানীয়দের কাছে এটি ‘হামের মানুষ’ (কাজের লোক) বেচার হাট’ নামে পরিচিত। মৌসুমে সপ্তাহে দুইদিন সকালে-বিকাল এভাবে মানুষের কোলাহলে জমে ওঠে শ্রমিকের হাট। দুই থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে বেচাকেনা শেষে ফাঁকা হয়ে যায় এই হাট।
চন্দ্রঘোনা কদমতলী গ্রামের ধানচাষি মোঃ ইব্রাহীম বলেন, আমি পাঁচ বিঘা ধান চাষ করেছি। এখন ৫ বিঘা জমির ধান কাটতে আমার ৮ জন শ্রমিক লাগবে। এখন ১ হাজার ১’শ টাকা দিনে মজুরি দাবি করছেন ধান কাটার শ্রমিকরা। জমির গিরস্তিরা বলছেন শুধু মজুরি না, শ্রমিকদের পিছনে আরও বিভিন্ন খরচ রয়েছে। আরও কয়েকজন গিরস্তি বলছেন এলাকার মাঠে ধান কাটার কাজ একসঙ্গে শুরু হওয়ায় কিছুটা শ্রমিক সংকট চলছে। অন্যদিকে প্রচন্ড গরমের কারণে চড়া দর দাবি করছেন শ্রমিকরা।