আল আমিন হোসেন বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সাপের কামড়ে রোগীর চিকিৎসা নেই রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। অভিযোগ উঠেছে রাতে সাপের কামড়ে আক্রান্ত রোগী আসলেই এ্যান্টিভেনম নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এতে দূর দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। ফলে সাপে কাটা রোগীদের মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ছে। আর হাসপাতাল কতৃপক্ষ বলছে রাতে কোন রোগী আসেন না।
গত মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর ) রাতে মুরগির ফার্মের পাশে একটি ঘরে শুয়ে ছিলেন হামিদুর রহমান (৩০)। রাত দেড়টার দিকে পায়ে কিছু একটা কামড় দেয়। তাৎক্ষণিক লাইট জ্বালিয়ে দেখেন একটি সাপ চলে যাচ্ছে। তখন মুরগির ফার্মের মালিককে ফোন দেন। ফোন পেয়ে ফার্মের মালিক দ্রুত উদ্ধার করে পাংশা হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
হামিদুর নওগাঁর মান্দা উপজেলার কবুলপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে । তিনি পাংশা উপজেলার মৌরাট ইউনিয়নের তালতলা গ্রামে একে আজাদের মুরগির ফার্মে কাজ করতেন।
মুরগির ফার্মের মালিক একে আজাদ বলেন, রাত চারটার দিকে হামিদুরকে নিয়ে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসি। জরুরি বিভাগে কাউকে না পেয়ে নার্সদের রুমে গেলে দরজা বন্ধ দেখি। সে সময় দরজায় ধাক্কালে একজন নার্স দরজা খুলে বলেন কি হয়েছে? সাপে কাটা রোগী নিয়ে এসেছি বললেই বলেন আমাদের এখানে এন্টিভেনম নেই। অন্য কোথায় যান।
একে আজাদ আরও বলেন, হামিদুরকে নিয়ে কুষ্টিয়া সদর হাসপালে যাই সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রবিবার মারা যায়। পাংশা হাসপাতাল থেকে এ্যন্টিভেনম দিলে তাকে বাঁচানো সম্ভব ছিলো। শুনেছি কয়েকদিন আগেও এক স্কুল ছাত্রী মারা গেছে সাপের কামড়ে। তারাও আমার মত পাংশা হাসপাতালে এসেছিল। কিন্তু হাসপাতাল কতৃপক্ষ বলেছিল এ্যান্টিভেনম নেই। আধুনিক যুগেও চিকিৎসার অভাবে সাপের কামড়ে রোগী মারা যাচ্ছে এর দায় কার?
পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা,ডা. শারমিন আহমেদ তিথী বলেন,গত মঙ্গলবার রাতে সাপের কামড়ে আক্রান্ত কোন রোগীকে হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে এরকম কথা আপনাদের মাধ্যমে জানেছি। এরকম কিছু হলে তো আমার ডাক্তাররা বলতো। তাছাড়া সাপের কামড়ে আক্রান্ত কোন রোগী আসলে চিকিৎসা না দেওয়ার সুযোগ নেই। কারণ আমাদের পর্যাপ্ত এ্যান্টিভেনম আছে। সব থেকে বড় কথা কোন রোগী আসলে হাসপাতালের রেজিস্টার খাতায় লেখা থাকতো।
অপর প্রশ্নে স্কুল ছাত্রীর মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জবাবে বলেন, কিছু দিন আগে হাসপাতালে এসে এ্যান্টিভেনম না পেয়ে একজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এরকম একটি অভিযোগে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত এখনো চলমান রয়েছে।