আল আমিন হোসেন বিশেষ প্রতিনিধি।।
রাজবাড়ীর পাংশায় ব্যক্তি স্বার্থে উপজেলা পরিষদের জায়গা দখল করে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেই নির্মাণাধীন রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
সরেজমিনে পাংশা পৌরশহরের প্রধান কাঁচা বাজারের মুরগী বাজারে গিয়ে দেখা যায় আগের জায়গায় আর মুরগীর বাজার নেই। প্রভাব খাটিয়ে মুরগী ব্যবসায়ীদেরকে সেখান থেকে উচ্ছেদ করে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পরে সেখানে ইট বালি সিমেন্ট দিয়ে রাস্তার কাজ শুরু করে প্রভাবশালীরা। বিষয়টি জানতে পেরে মঙ্গলবার (১ আগষ্ট ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
একাধিক মুরগী ব্যবসায়ী ও স্থানীয় দোকানদার বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে কয়েকজন প্রভাবশালী, বাজারের ইজারাদার ও পৌর মেয়রের নির্দেশে মুরগী ব্যবসায়ীদেরকে এখান থেকে উচ্ছেদ করে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়। এবং বলা হয় মুরগী বাজারের পরে যে জমি রয়েছে ওই জমি প্লট আকারে বিক্রয় বা মার্কেট নির্মাণের জন্য এখান দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হবে। পরে আমরা সেখান থেকে সরে গিয়ে অন্য জায়গায় দোকান বসাই।
মুরগীর ব্যবসায়ীরা আরো বলেন এখানে ঘর আছে কিন্তু ছাদ না থাকায় বৃষ্টি ও রোদের কারণে বেচাকেনা করতে সমস্যা হওয়ায় আমরা নিজেদের টাকা খরচ করে মাথার উপরে টিনের চাল দিয়ে নিয়েছি এতে আমাদের অতিরিক্ত অনেকগুলো টাকা খরচ হয়েছে। এখন পুঁজি স্বল্পতার কারণে ব্যবসা করতে সমস্যা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ব্যবসায়ী বলেন, বাজারের পরে যে জমি রয়েছে সেই জমির দাম বাড়াতে এখানে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। তারা উচ্ছেদকারীদের এটাও বলতে শুনেছেন যে এখান দিয়ে রাস্তা হলে প্রতি শতাংশ জমি কয়েক এক লক্ষ টাকা বেশি ধরে বিক্রি করা যাবে। জমির মালিক কে বা কাহারা জানতে চাইলে তারা বলেন বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন পৌরসভার মেয়র, তারও এই জমির মালিকানা রয়েছে, এই সমস্ত বিষয় উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদ উদ্দিন ওদুদ জানেন বলেও তারা জানান।
অভিযুক্ত প্রভাবশালী জমির মালিক হবিবারের কাছে বিষয়টি জানতে চেয়ে ফোন করা হলে তিনি বলেন তার আত্মীয় অসুস্থ তিনি ঢাকায় আছেন কথা বলতে পারবেন না বলে ফোন কেটে দেন।
পৌর বাজারের ইজারাদার লালটু বিশ্বাস বলেন, মুরগী বাজারের শেষে যে জায়গাটা রয়েছে তার স্বার্থেই মুরগী বাজার এখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে তবে উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া রাস্তার কাজ করাটা অন্যায় হয়েছে।
পাংশা পৌর মেয়র ওয়াজেদ আলী মন্ডল বলেন, আমার ঐজমির কোন অংশ নেই। মুরগী বাজারের পরে যে জমি রয়েছে ওই জমির মালিক হবিবার ও ইজারাদার লালটু বিশ্বাস ব্যবসায়ীদের কে উচ্ছেদ করে। পরে সেখানে জমির মালিক হবিবার রাস্তার কাজ শুরু করে।
উপরোক্ত বিষয়ে জানতে উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদ হাসান ওদুদ কে মুঠোফোনে ফোন করা হলে তিনি পরে ফোন দিবেন বলে কেটে দেন। পরে তাকে কয়েকবার ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, পাংশা বাজারের মুরগী ব্যবসায়ীদেরকে উচ্ছেদ করে অন্যত্রে বসিয়ে উপজেলা পরিষদের রেকর্ডীয় বাজারের জায়গায় দখল করে অবৈধভাবে নির্মাণ কাজ করায় পাকা নির্মাণ উচ্ছেদ করা হয়েছে। পুনরায় কেউ উপজেলা পরিষদের জায়গায় হস্তক্ষেপ করলে দায়ী সকল ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরো হলেন মুরগির ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে তাদেরকে আগের স্থানে বসানোর ব্যবস্থা করা হবে।