নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কনস্টেবল শওকত হোসেনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গত ১৬ এপ্রিল তার চাকরিচ্যুতির আদেশে স্বাক্ষর করেন সিএমপির বন্দর বিভাগের উপকমিশনার শাকিলা সোলতানা। আদেশের কপি পাঠানো হয় সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়ের দপ্তরে।
ওই আদেশে বলা হয়েছে, ‘৭১ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত (শওকত হোসেন) শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যা থাকায় এবং বেওয়ারিশ মানুষ নিয়া মানবিক কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি করা তার পক্ষে সম্ভব নয় এমন বক্তব্য লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।’
কনস্টেবল শওকত হোসেনের চাকরিচ্যুত আদেশের মধ্য দিয়ে মূলত সিএমপির মানবিক পুলিশ ইউনিট বন্ধ হয়ে গেল। ২০১৯ সালে তৎকালীন সিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমানের আদেশে মানবিক পুলিশ ইউনিটের যাত্রা শুরু হয়েছিল। তখন কমিশনার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৫০ হাজার টাকাও দিয়েছিলেন।
বেওয়ারিশ মানুষদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে ইতিবাচক কার্যক্রমের মাধ্যমে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করায় তখন গণমাধ্যমে পুলিশের এই উদ্যোগ ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছিল।
সিএমপির এমন উদ্যোগের পর কিছু পুলিশ সদস্য মানবিক কার্যক্রম বাড়িয়ে দেন। অনেকেই নিজদের নামের আগে ‘মানবিক’ শব্দটি ব্যবহার শুরু করেন। এখন যে মানবিক পুলিশিংয়ের প্রচারণা চালানো হয়, সেটার ভিত্তি পেয়েছিল সিএমপির উদ্যোগের কারণে।
শওকত ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ডবলমুরিং থানা এলাকায় একটি মাহফিলে অতিথি হয়ে যান এবং ‘বিতর্কিত’ বক্তব্য দেন। সেই বক্তব্যের জেরে পরবর্তী সময়ে তাকে দামপাড়া বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল থেকে বদলি করে কর্ণফুলী থানায় পাঠানো হয়।
এছাড়াও শওকতের অনেক কর্মকাণ্ডও প্রশ্নের মুখে পড়েছিল। তিনি পুলিশের চাকরি করলেও কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকতেন। সে সময় তিনি রোগীদের নিয়ে ভিডিও করতেন। চকবাজার এলাকার আমিনুল ইসলাম শওকতের মানবিক কাজকে শুধুই মানবিক কাজ হিসেবে দেখতে রাজি নন। তিনি মনে করেন যে কোনো কাজের ক্ষেত্রে শওকত ভিডিওতে আগ্রহী। এই ভিডিও অর্থ উপার্জনে সহায়ক। বললেন, ফেসবুক ও ইউটিউবে মনিটাইজেশন না থাকলে হয়তো ইদানীং এতো মানবিকতা চোখে পড়তো না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজনের অভিমত, যার যেটা কাজ তাঁকে সেটা করতে হবে। না হলে শৃঙ্খলা থাকে না।